ফিটনেস ধরে রাখার উপায়

ভূমিকা

অনেকের মনে প্রশ্ন জন্মে অভিনয় শিল্পীরা কিভাবে তাদের ফিট রাখে। তারা যদি পারে  আমরা কেন পারি না। এমন চিন্তা যদি আপনার মনে আসে তাহলে আজকের এ লেখাটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ । 

ফিটনেস বলতে একজন ব্যাক্তির শারিরীক, মানসিক সু-স্বাস্থ্য কেই  বুঝায়। আপনি যখন এগুলো দিকে হেলদি তখনই আপনি ফিট। তাহলে শারিরীক, মানসিক ভাবে সুস্থ থাকবেন কি কি উপায়ে? চলুন দেখি

১. খ্যাদ্যাভাস: সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং  স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনে খ্যাদ্যাভাস এর ভূমিকা প্রচুর। আপনি যদি প্রতিদিন ভাজাপোড়া তৈলাক্ত খাবার, চিনি যুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড এগুলো খাবারে অভ্যাস্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্বাস্থের উন্নতি কখনও হবে না। খুবই তাড়াতাড়ি আপনি নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বেন এসব খ্যাদ্যাভাসের জন্য। যারা ফিট তারা সবসময় হেলদি ফুড খায়। ক্যালরি মেপে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। হাল্কা খাবার যেগুলো তাড়াতাড়ি হজম হয় সেগুলো খাবার শরীরের জন্য খুবই উপকারী স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং কিছু কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার দিয়ে প্লেট সাজান। বেশি বেশি সবুজ সবজি, সালাদ, মাছ, মাংস, অতিরিক্ত তেল, চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া বাধ দিয়ে দিন। এগুলো খাওয়া মানে নিজের শরীরে প্রেসার ক্রিয়েট করা। 

প্রসেসড খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে দিন কারণ প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকলে তা খাবারে বাড়তি ফ্যাট, শর্করা ও সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ে আসে। আর কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদা মেটাবেন খোসাযুক্ত গম মানে ব্রাউন গম, লাল চালের ভাত, ওটস এগুলো দিয়ে। আপনি যদি খ্যাদ্যাভাস এ পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপনি ফিট থাকার যুদ্ধে অনেকটা এগিয়ে থাকবেন। খ্যাদ্যাভাসের জন্য আপনার শরিরেরও গুড পরিবর্তন লক্ষ করতে পারবেন।

২. নিয়মিত শরীরচর্চা: শরীর ফিট রাখার ক্ষেত্রে শরীরচর্চার কোন বিকল্প নেই। আপনি যত পরিশ্রম করবেন তত আপনি ভালো থাকবেন। অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে তার মধ্যে আপনি রোজ নিয়মিত ৩০ মিনিট করে হাটুন। বিকেলে সাইকেলিং অথবা সুইমিং করতে পারেন। শরিরের প্রত্যেক অঙ্গর উপকার করে এই ব্যায়াম গুলো। এগুলো করে আপনি অফিস বা বিদ্যালয়ে যেতে পারেন। কিন্তু রোজ করবেন তাহলে ভালো ফলাফল নিজেই অনুভব করবেন। আরও যদি বেশি হার্ড ওয়ার্ক করতে চান তাহলে আরও অনেক ব্যায়াম রয়েছে যেমন, ওঠা-বসা, পুশ আপ, বডি রোল আপ, দড়ি লাফ, বার্ড ডগ ইত্যাদি যেগুলো আপনি বিকেলে করতে পারেন। তবে হাটাহাটি করার ওপর কোন কিছুই নেই বেশি বেশি হাটাহাটি করুন।

৩. বিশ্রাম : শারীরিক ক্ষেত্রে নিয়ম মানার পাশাপাশি আপনার মানসিক হেলথ এরও কেয়ার নিতে হবে। মানসিক হেলথ ঠিক না থাকলে শরীর ও সাথ দিবে না। তাই পরিশ্রমের পর যথাযথ সময়ে বিশ্রাম নিতে হবে। সঠিক সময়ে ঘুমিয়ে যেতে হবে। বর্তমান মানুষের মধ্যে এটি অনেক সমস্যার তৈরি করে যে মানুষ ঘুমাতে যায় অনেক দেরি করে, এতে করে কিন্তু ঘুম ঠিক মতো হচ্ছে না ফলে সারাদিন ক্লান্তিকর ছ্যাম ছ্যামে কেটে যায়। মানষিক স্বাস্থ্য অবনতির দিয়ে হেলে যায়।

সেই জন্য সময়ের কাজ সময়ে করে আমাদের বিশ্রাম নেওয়া উচিত তাহলেই আপনারা ফিট থাকতে পারবেন। যতই কাজ থাকুক না কেন ঘুমের সময় আসলে চিন্তা করবেন আমাকে ঘুমোতেই হবে নিজেকে ফিট রাখার জন্য।

৪. ইয়োগা : শারিরীক সুস্থতা, মানসিক চাপ থেকে মুক্তি মেলে ইয়োগা করলে। এটি প্রাচীন একটি পদ্ধতি। ইয়োগার শাখা মূলত আটটি। এর মধ্যে তিনটি বিশ্বব্যাপী পরিচিত । *শারীরিক *নিশ্বাসের ব্যায়াম *ধ্যান। এই তিন শাখা নিয়মিত চর্চা করে নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখা সম্ভব। ইয়োয়া রোগ পরিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, সর্দি,কাশি, ব্যাথা, ডিপ্রেশন, চাপ কমাতে সাহায্য করে তাছাড়া ইয়োগা যে কোন বয়সের মানুষই করতে পারে। ইয়োগা অনুশীলন করলে দেহ ও মন এমনকি মানুষ এবং  প্রকৃতির মাঝে এক ধরনের সংযোগ স্থাপিত হয়। যা মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা অর্জনে সাহায্য করে। মানুষকে চাপ মুক্ত করতে সাহায্য করে। তাই নিজেকে ফিট রাখতে আজ থেকে আপনিও শুরু করে দিন নিয়মিত যোগ ব্যায়াম।

৫. পড়াশোনা : জানার কোন শেষ নেই। তাই জ্ঞান অর্জন করতে হবে বেশি বেশি বই পড়ে। বই পড়ার মাধ্যমে আপনার চিন্তাভাবনার পরিবর্তন হবে, স্মার্ট হবে চিন্তাধারা। তাছাড়া বই পড়লে কোন খ্যাদ্যের কত ক্যালরি, সকালে, দুপুরে, রাতে কি কি খাওয়া প্রয়োজন তা আপনি নিজেই বিবেচনা করতে পারবেন। কোন পরি মানে কি খেতে হবে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা হবে। পড়াশোনা করার মাধ্যমে আপনি সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে অবগত হবেন, শরিরচর্চা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা নির্ধারণ করতে পারবেন। এছাড়াও বই পড়লে আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে, মুখের কথা মার্জিত হবে যা ফিটনেসের মধ্যেও পরে। তাই নিজেকে ফিট রাখতে হলে বেশি করে জানুন এবং বই পড়ুন।

দীর্ঘদিন সচল ও কর্মক্ষম থাকার জন্যও ফিটনেস জরুরি। এছাড়াও ফিটনেস আপনাকে সমাজে আলাদা একটি সুন্দর মানুষ করে তুলে। আপনার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে আসবে, কোন কাজ করলে ক্লান্তি আসবে না, ভালো ঘুম হবে আপনি ফিট থাকলে। তাই নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে উপরিউক্ত উপায়গুলো মেনে চলতে ভূলবেন না।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url