শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
বর্তমান সময় এমন সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে পরিবারের কারণে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে না। শিশু পরিবারের অবহেলায় অখেয়ালে অন্যরকম হয়ে তৈরি হয়ে ওঠে। যা মোটেও কাম্য নয়। পরিবার যেন তার বাচ্চার ওপর মনোযোগী হয় সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আমাদের আজকের এ লেখাটি।
শিশু জন্মের পরপরই সে পরিবারের ছায়া পায়। পরিবার তার প্রথম প্রতিষ্ঠান। আর শিশুরা বড় দের অনুকরণ করে। এ ক্ষেত্রে শিশুর বুদ্ধির বিকাশের জন্য পরিবারের গুরুত্ব অপরিহার্য। কারণ এমন সময় পরিবারের সদস্য রা যেভাবে আচরণ করবে শিশু ও তাই শিখবে। আপনি যদি শিশুর সামনে ভালো আচরণ করেন সেও সেমন ভাবেই তৈরি হবে। কাজেই শিশুদের চরিত্র গঠনে অভিভাবকদের সবসময় সচেতন থাকা আবশ্যক।
পরিবার যেভাবে ভূমিকা পালন করবে
১. যথাযথ পরিবেশ তৈরি করা: শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকে তার পারিপার্শ্বিক দিক গুলো খুবই খেয়াল করে যেমন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,গাছপালা, সবকিছু সাজানো গোছানো, সৎ প্রতিবেশি, আসেপাশে ঝগড়া, ঝামেলা কম এমন পরিবেশ শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরিবারের উচিৎ বাসস্থানের জন্য শান্তিপূর্ণ স্থান চয়েজ করা।
2. সন্তানকে সময় দেওয়া: বর্তমান জেনারেশনে এসে দেখবেন যে বাবা মা দুজনেই কর্ম ব্যাস্ততায় বাইরে থাকে অধিকাংশ সময়, পরিবারের অন্য সদস্য রা গ্রামে বসবাস করছে। এ ক্ষেত্রে তারা তাদের সন্তানকে চাইল্ড কেয়ারের কাছে রেখে যায়। তখন বাচ্চার ঠিক মতো যন্ত নেওয়া হয়না। সে পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহ বাবা মার আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত থাকে। কিন্তু তাদের উচিৎ সন্তানকে সময় দেওয়া।
3. শিশুর ওপর খবরদারি করা থেকে বিরত থাকা: ছোট বেলায় শিশুরা অনেক চঞ্চল হয়, মাটিতে গিয়ে খেলে, খাওয়ার বায়না করে, এটা ভেঙ্গে ফেলে, ওটা নষ্ট করে,বা অন্যান্য কিছু যা শিশু করতে চায় তা করতে দিন বাধা দিয়েন না। এসব করলে শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয়। তবে যেগুলো ক্ষতিকর জিনিস সেগুলো হাতের নাগালে রাখাই ভালো
4. উচ্চস্বরে কথা বলবেন না : কোন শিশুর সাথেই চ্যাচামেচি করে কথা বলবেন না এতে করে সেও আপনার মতো আচরণ শিখে যাবে। শিশুরা আদর প্রিয়। তাদের বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন মেনে নিবে।
5. পারিবারিক কলহ বাদ দিন : অনেক পরিবারে দেখা যায় বাবা - মা অথবা শাশুড়ী - বৌ এর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকে। এবং বাচ্চার সামনে এমন কলহ তৈরি করে অনেক পরিবার। কিন্তু এতে আপনার শিশু কি শিখবে? এতে করে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সমস্যা হয়। তাই পারিবারিক শান্তি বজায় রাখুন।
6. যৌথ পরিবারে থাকুন : আজকালকার অনেক মেয়েরা একা থাকতে চায়। সবাই না কিন্তু কিছু কিছু রয়েছে তারা একা থাকার জন্য পরিবার কে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু একা থাকলে আপনার সন্তানের জ্ঞান বৃদ্ধি হবে না। কারণ আপনি যখন ব্যাস্ত থাকবেন তখন পরিবারের বাকি সদস্য অর্থাৎ দাদা, দাদি, নানা নানি, এদের কাছে আপনার সন্তান থাকবে। এতে করে তারা বাচ্চার সাথে কথা বলবে, আগের গল্প শোনাবে ফলে তার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। তাই সন্তানের সুষ্ঠু বিকাশে যৌথ পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
7. সন্তানকে সমাজ পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করানোর জন্য তাকে নিয়ে মাসে একদুইবার ছুটিতে ঘুরতে যান। এতে করে শিশুর ভাব আদান প্রদান হবে। সাথে সবাই একঘেয়েমি দূর হবে।
আরও এমন ধরনের কিছু পারিবারিক ভূমিকা রয়েছে যা আপনার সন্তানের বিকাশের জন্য আপনার করা উচিৎ। আপনার সন্তান কে এভাবে ট্রিট করুন। প্রত্যেক বাবা-মাই চায় তার সন্তান সুন্দর ব্যাক্তিত্বের মানুষ হোক এবং ভালো মন্দ বাছাই করার বিবেক হোক। তো এ ক্ষেত্রে আপনারাই যদি না ভূমিকা পালন করেন তাহলে চাইলেও হবে না। তাই সন্তানের বিকাশের সময় তার সামনে শান্তিপূর্ণ আচরণ করুন।
শিশুর বিকাশে বাধা হতে পারে যে বিষয়গুলো
শিশু বিকাশের গুরুত্ব
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url