বর্তমান আতঙ্ক রাসেলস ভাইপার

 বর্তমান সময়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর বহুল আলোচিত একটি বিষয় হচ্ছে রাসেলস ভাইপার।

এই জেনারেশনে কোন ঘটনা ঘটলেই হয়েছে জনগণ ফেইসবুকে সেই বিষয় টি নিয়েই পরে থাকে। একেক জন একেক মন্তব্য করছে ফলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পরছে। কোন তথ্য সঠিক আর কোনটা সঠিক না তা বিবেচনা করতে হবে আতঙ্কিত না হয়ে। কারণ ফেইসবুকে অনেক সময় অহেতুক কথাও বলা হয়। 

আসুন জেনে নেই এই সাপ সম্পর্কে কিছু তথ্য 

নামকরণ 

বলা হয় স্কটিশ সার্জন এবং প্রকৃতিবিদ প্যাট্রিক রাসেলের নাম থেকে এসেছে এই রাসেলস ভাইপার সাপের নাম। মূলত তিনি এই সাপের ওপর গবেষণা চালাতেন এবং সাপের ওপর বইও লিখে ছিলেন। সেজন্য তার নামের সাথে মিল রেখে এ সাপের নাম হয় রাসেলস ভাইপার। তবে এর বৈজ্ঞানিক নাম "ডাবোয়া রাসেলি"। 

 গঠন এবং বৈশিষ্ট্য 

  • এ সাপ এর রঙ ব্রাউন সেডের মধ্যে অর্থাৎ মাটি এবং বালুর মতো রঙ। শরীরে কালো  কালো চাকতির মনে ছোপকাটা দাগ রয়েছে। ফলে এটি খুব সহজেই মাটির সাথে মিশে যায়। 
  • রাসেলস ভাইপারের দেহ মোটাসোটা। লেজ ছোট ও সরু হয়। এদের মাথা ত্রিকোণ এর মতো সেপ এর হয়।
  • এই সাপের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যে এরা অন্য সাপের মতো ডিম দেয় না। সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। 
  • এই সাপ দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। এই সাপের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ইদুর। আরও অন্যান্য প্রাণী। এগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পেয়ে সে দ্রুত বংশ বৃদ্ধিতে সক্ষম হচ্ছে, ওদিকে এই সাপের ধ্বংশ কারীকে আমরা মেরে ফেলছি। তার দিন দিন বেড়েই চলেছে এর সংখ্যা। 
  • এ সাপ সাধারণত মানুষকে কামড়ায় না। আসলে কোনো সাপই মানুষকে কামড়ায় না যতক্ষণ অব্দি মানুষ টি তার কাছে চলে আসে। কিন্তু রাসেলস ভাইপার এর বৈশিষ্ট্য হলো যে এটি দ্রুত আক্রমণাত্মক। অনেক দ্রুত চলাফেরা করে আর আক্রমণ ও করে ফেলে। 


রাসেলস ভাইপার কামড় দিলে কি হবে?

রাসেলস ভাইপার কামড় দিলে ক্ষতস্থান বোঝা যায়। কামড় দেওয়া স্থানটি ফুলে যায় এবং একটু লাল বর্ণ ধারণ করে। এই সাপটি কামড়ালে সাথে সাথেই ব্যাক্তির মৃত্যু হয় না। যদি কোনো ব্যাক্তি কামড়ানোর ৩-৪ ঘন্টার মধ্যে গিয়ে অ্যান্টিভেনম নেয় তাহলে তার কিচ্ছুই হবে না। এ সাপে কামড়ালে অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসালয়ে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু ভিকটিমকে সতর্ক করতে হবে যেন সে হাতপা কম নাড়াচাড়া করে। বেশি নাড়াচাড়া করলে দ্রুত বিশ রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরবে। 

 বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি ডাঃ মোঃ আবুল ফয়েজ উল্লেখ করেন যে, রাসেলস ভাইপার  সাপের দংশনের গড় ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন পর রোগীর মৃত্যু হতে পারে। 

আমাদের মন্তব্য 

 রাসেলস ভাইপারের থেকেও বিষাক্ত সাপ বাংলাদেশে রয়েছে। এ সাপের কামড়ে সাথে সাথেই মৃত্যু হয়না,সময় মতো চিকিৎসা নিলেই ঠিক হয়ে যায়। তাই অনলাইনে রাসেলস ভাইপার মারার ট্রেন্ড বা এ সম্পর্কে কোন ভূল পোস্ট পড়ে আতঙ্ক হবেন না। কিন্তু সতর্ক অবশ্যই থাকতে পারেন। রাতে চলাফেরার সময় টর্চ ব্যাবহার করুন এবং শব্দ করে হাটুন, এতে করে পথে সাপ থাকলে সে চলে যাবে। বাড়ির আসেপাশে ঝোপঝাড় আগাছা পরিষ্কার রাখবেন। খড়ির ঘরে যাওয়ার সময় বুট জুতা পড়ে যাবেন এবং সাবধানে শব্দ করতে করতে যাবেন কারণ চিপা স্থানে এগুলোর বাসস্থান হয়। আর এদের যেসব প্রাণী খায় সেসব প্রাণী যেমন: বেজি, চিল, ঈগল, গন্ধগোকুল এ ধরনের বিভিন্ন প্রাণী দেখলে তাদের আটকে রাখবেন না বা হত্যা করবেন না। তাহলে খাদ্য শৃঙ্খল এ ব্যাঘাত ঘটবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url