ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যাবহারের পদ্ধতি

ভিটামিন ই ক্যাপসুল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আপনার কোষকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই আপনার রক্তকণিকা, মস্তিষ্ক, চোখ এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 আজকে আমরা জানবো ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের জন্য উপকারী। অল্প বয়সে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

 যেভাবে মুখে এটি ব্যাবহার করবেন:

১। অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা থেকে শাঁস বের করে নিয়ে এর মধ্যে ভিটামিন ই-এর একটি ক্যাপসুল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে চাইলে ব্লেন্ডারেও ব্লেন্ড করতে পারেন। ব্লেন্ড করে সেই মিশ্রণটি মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে মুখ নরমাল টেম্পারেচারের পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এটি দিনে একদুই বার করতে পারেন।ধীরে ধীরে দেখবেন নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের মান উন্নত হচ্ছে। 


২। গ্রিন টি: এক চা চামচ গ্রিন টি একটি পাত্রে ছেঁকে নেওয়ার পরে এর মধ্যে এক চামচ মধু আর ভিটামিন ই-এর একটি ক্যাপসুল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে । তারপর সেই মিশ্রণটি মুখে দিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। 

 ৩। লেবু : একটি বাটিতে দুই থেকে তিন চামচ টক দই নিন তার সাথে এক ফোটা লেবুর রস এবং একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ভালো করে মিক্সড করে মুখ ধুয়ে এপ্লাই করতে হবে এবং ১৫ মিনিট রেখে নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার এ কাজটি করতে হবে। এটি মুখের ময়লা দূর করে এবং মুখে ছাপ ছাপ ভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

 ৪। নারিকেল তেল: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নারিকেল তেল এর সাথে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিক্সার করে মুখে মেখে 20 মিনিট অব্দি রেখে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। 

 ৫। হলুদ : কাচা হলুদ বেটে তারসাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে মেশান তারপর মুখ পরিষ্কার করে মুখে ১০-১৫ মিনিটের জন্য এপ্লাই করে রেখেদিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। ত্বককে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ থেকে দূরে রাখতে কাজ করে হলুদ। সেইসঙ্গে রোদের অতিবেগুনি আলোকরশ্মি থেকে ত্বকে রক্ষা করতেও হলুদের জুড়ি মেলা ভার।

মুখে ব্যাবহারের পূর্বে সতর্কতা 

•ভিটামিন ই সরাসরি মুখে মাখানো থেকে বিরত থাকুন। যাদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ তাদের জন্য এটি হুমকিস্বরূপ হতে পারে। ত্বকে এলার্জি বা র‍্যাশ দেখা দিতে পারে।

• ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যাবহার করার পূর্বে দেখেনিন আপনার ত্বক অয়েলি কি না! অয়েলি ত্বকে বা ব্রণ থাকা ত্বকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যাবহার এর ফলে এটি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। 

• ক্যাপসুল কেনার সময় চেইক করে নেবেন এটার মেয়াদ আছে কি নেই। মেয়াদ না থাকলে এটার কার্যকারিতা  থাকে না বরং এটি ব্যাবহারের ফলে আপনার ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে। 

তাই সরাসরি এই ক্যাপসুল টি ব্যাবহার না করে উপরোক্ত ধারাগুলো চেইক করে তারপর ব্যাবহার করবেন। অথবা প্রথমেই সরাসরি মুখে না লাগিয়ে হাতে ব্যাবহার করে পরিক্ষা করে নিতে পারেন যে কোন সমস্যা ঘটছে কি না অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল 

চুলঝরা রোগ থেকে শুরু করে চুলের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে ভিটামিন ই ক্যাপসুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন : চুল ঝরা রোধ, বাইরের ধুলা-বালি, সূর্যের ক্ষতিকর তাপ, বাতাস থেকে চুলকে প্রটেক্ট করতে সাহায্য করে। ভেঙ্গে যাওয়া চুল বা ফেটে যাওয়া চুল ঠিক করতেও এর জুরি নেই। চুলে পুষ্টি যোগায় এই ভিটামিন ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। 

যেভাবে চুলে ব্যাবহার করবেন :

• নারিকেল তেলের সাথে ১-২ টি ভিটামিন ই  মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে ধুয়ে ফেলবেন। সপ্তাহে একবার এটি করলে ভালো রেজাল্ট পাবেন। 

• কাঁচা ডিমের সাথে কয়েক ফোটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলে ব্যাবহার করতে পারেন। কাঁচা ডিমের সাদা অংশ চুল রুক্ষ হওয়ার থেকে বাঁচায়। আর ভিটামিন ই এর সাথে দেওয়ার ফলে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। মিশ্রণ টি আধা ঘণ্টা লাগিয়ে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। 

• জবা ফুল আর ভিটামিন ই এর মিশ্রণ। জবা ফুলের মধ্যে অ্যামিনো অ্যাসি়ড রয়েছে যা চুলে কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। জবা ফুলের পেস্ট করে নিয়ে তাতে একটি  ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যাবহার করে চুলে লাগিয়ে আধা ঘন্টার মতো রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে একবার করলে চুলের প্রাকৃতিক জেল্লা বজায় থাকবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হবে। 

এগুলো উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই নিয়মিত প্রয়োগ করতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন যে আপনার মাথার স্কিন সেনসেটিভ কি না। অর্থাৎ আপনার এলার্জি আছে কিনা। এলার্জি থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে তারপরই ব্যাবহার করবেন।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url